ঢাকা , বুধবার, ০৬ অগাস্ট ২০২৫ , ২২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘কোটা নয়, চাই সম্মান’-জুলাই যোদ্ধাদের সংবর্ধনায় বানারীপাড়ার মাসুম।


আপডেট সময় : ২০২৫-০৮-০৬ ১৫:৫৮:৩৮
‘কোটা নয়, চাই সম্মান’-জুলাই যোদ্ধাদের সংবর্ধনায় বানারীপাড়ার মাসুম। ‘কোটা নয়, চাই সম্মান’-জুলাই যোদ্ধাদের সংবর্ধনায় বানারীপাড়ার মাসুম।
 
বানারীপাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি।
 
বরিশাল জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ৫ আগস্ট ২০২৫, শিল্পকলা একাডেমির হলরুমে অনুষ্ঠিত হলো ‘জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানমালা-২০২৫’। এ আয়োজনে জুলাই গণআন্দোলনের শহিদ পরিবার ও আহত যোদ্ধাদের সংবর্ধনা, আলোচনা সভা এবং একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
 
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বরিশাল বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার মো. রায়হান কাওছার (অতিরিক্ত সচিব)। বিশেষ অতিথি ছিলেন রেঞ্জ ডিআইজি, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, ও বিভাগীয় পুলিশ সুপার। সভাপতিত্ব করেন বরিশালের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জনাব দেলোয়ার হোসেন।
 
অনুষ্ঠানে আহত জুলাই যোদ্ধাদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন, বানারীপাড়ার সন্তান মাসুম বিল্লাহ। তার বক্তব্যে উঠে আসে সামাজিক অবিচার, দালালি, তদবিরের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ এবং কর্মসংস্থানের দাবির মতো বাস্তবমুখী বার্তা। তিনি বলেন, “আমরা সরকারি চাকরি চাই না, আমরা চাই সম্মানজনক কর্মসংস্থান। যেন পরিবারের মুখে দু’বেলা আহার তুলে দিতে পারি। আমরা কোটার নামে কোনো সুবিধা চাই না-আমরা চাই যেন মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রতিটি চাকরি হয়।" তিনি আরও বলেন, “আমরা যারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাজপথে ছিলাম, আজ তারা যেন সমাজের বোঝা না হয়ে যাই। আমাদের যদি সম্মানজনকভাবে বাঁচার পথ দেখানো যায়—তবেই শহিদদের রক্ত সার্থক হবে।”
 
এছাড়াও মাসুম বিল্লাহ সরকারের প্রতি আহ্বান জানান ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে সনদ প্রদানের। তিনি বলেন, “যেভাবে ভাষা শহিদদের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে, ঠিক তেমনি আমাদেরও স্বীকৃতি প্রয়োজন। ইতিহাসকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে, তাকে সঠিকভাবে দলিলবদ্ধ করতে হয়।” তিনি সাধারণ নাগরিকদের চিকিৎসা, শিক্ষা, প্রশাসনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে হয়রানি প্রসঙ্গে বলেন, “যেখানে সেখানে দালালি ও তদবির না থাকলে এখন আর সেবা পাওয়া যায় না। এই অসুস্থ সংস্কৃতি এখনই বন্ধ করা উচিত।”
 
আলোচনার এক পর্যায়ে মাসুম বিল্লাহ বলেন, “যারা একসময় অভাবের সঙ্গে লড়েছে, তারা আজ ‘জুলাই’কে পুঁজি করে কোটি টাকার মালিক হয়েছে। এটা সত্যিকারের যোদ্ধাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা। আমাদের জেগে থাকতে হবে, ঘুমিয়ে পড়লে চলবে না। অন্যায়, দুর্নীতি ও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতেই হবে।”
 
আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে ফিলিস্তিন সংকটের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, “বিশ্বের প্রতিটি মানুষের বাঁচার অধিকার রয়েছে। বাংলাদেশসহ সব দেশের উচিত নিরীহ ফিলিস্তিনি শিশু ও জনগণের পাশে দাঁড়ানো এবং তাদের মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করা।”
 
অনুষ্ঠানে উপস্থিত অনেকেই মাসুম বিল্লাহর বক্তব্যে আবেগাপ্লুত হন। কেউ কেউ বলেন, “তার মুখেই যেন আমাদের না বলা কথাগুলো উঠে এসেছে।”

অনুষ্ঠানের শেষ অংশে বরিশাল বিভাগের জুলাই শহিদ ও আহত যোদ্ধাদের জন্য বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনার মাধ্যমে আয়োজনের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। উপস্থিত জনতা মনে করেন, এ ধরনের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও আয়োজন শুধু সম্মান নয়, ইতিহাসের দায়িত্বও পালন করছে।





 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin

কমেন্ট বক্স

প্রতিবেদকের তথ্য

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ